ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হলে করনিয়
ভারত বর্ষ সহ বিশ্বের ১০৫টি দেশের ৫৩ কোটির বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য ফাঁস হয়েছে সম্প্রতি। অবশ্য ঠিক সম্প্রতি বলা যায় না, কারণ এই তথ্যগুলো এর আগেও একবার ফাঁস হয়েছিল। সেবার হাজার হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছে, সবার হাতে পৌঁছায়নি। আর এবার দেওয়া হয়েছে বিনা মূল্যে, ছড়িয়েছে ব্যাপক হারে। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে তেমনটাই বলা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া তথ্যে ব্যবহারকারীর নাম, মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা, ভৌগোলিক অবস্থান, জন্ম তারিখ, পেশা, রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস কিংবা অ্যাকাউন্ট তৈরির তারিখ পর্যন্ত আছে।
মজার ব্যাপার হলো, এক সাইবার নিরাপত্তা গবেষক জানিয়েছেন, তিনি এই তথ্যে ফেসবুকের কর্ণধার স্বয়ং মার্ক জাকারবার্গের ব্যক্তিগত তথ্য পেয়েছেন। সেখানে তাঁর মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা ও জন্ম তারিখের মতো তথ্যগুলোও ছিল। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর তথ্যেরই যদি এমন নাজুক অবস্থা হয়, তবে অন্য ব্যবহারকারীদের কথা ভেবে দেখুন!
ফেসবুক বলছে, যে নিরাপত্তা ত্রুটির কারণে এই তথ্যগুলো ফাঁস হয়েছিল, সেটি ২০১৯ সালেই ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু যে তথ্য একবার ফাঁস হয়েছে, তা ফিরিয়ে নেওয়ার আর কোনো সুযোগও তো নেই। যে ফোরামে নতুন করে তথ্যগুলো ফাঁস করা হয়েছে, সেখানে ৩৮ লাখের বেশি বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য রয়েছে বলে উল্লেখ করা ছিল।
আপনার অ্যাকাউন্ট ওই ফাঁস হওয়া তথ্যে আছে কি না, তা খুঁজে বের করা বেশ কষ্টসাধ্য। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ‘হ্যাভ আই বিন পনড’ নামের একটি ওয়েবসাইট সে কাজটি কিছুটা সহজ করে দিয়েছে। ওয়েবসাইটটিতে গিয়ে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ই-মেইল ঠিকানা কিংবা মুঠোফোন নম্বর দিলে বলে দেবে সেটি ফাঁস হওয়া তথ্যে আছে কি না।
যেটা করতে হবে
শুরুতে haveibeenpwned.com ঠিকানার ওয়েবসাইটে যান।
এবার আপনার মুঠোফোন নম্বর কিংবা ই-মেইল ঠিকানা ইনপুট দিয়ে ‘pwned?’ লেখা বোতাম চাপুন। মুঠোফোন নম্বরের বেলায় লিখতে হবে ইংরেজিতে এবং আন্তর্জাতিক ফরম্যাটে। অর্থাৎ ‘+8801...’ এভাবে, কোনো স্পেস ছাড়া।
আপনার অ্যাকাউন্ট ফাঁস হওয়া তথ্যে থাকলে লাল, না থাকলে সবুজ বার্তা দেখাবে।
লাল বার্তা দেখালে খানিকটা নিচে স্ক্রল করলে পাবেন কবে কোন তথ্য ফাঁসে আপনার মুঠোফোন নম্বর কিংবা ই-মেইল ঠিকানা যুক্ত ছিল।
মনে করুন, আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য ফাঁস হয়েছে। এটা চিন্তার বিষয় তো বটেই, তবে ঘাবড়ে যাবেন না। বরং এ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। ফেসবুকে কিছু শেয়ার করার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন, এটা ফাঁস হলে আপনার কোনো ক্ষতি হবে কি না। নির্ভরযোগ্য সেবা ছাড়া ফেসবুকের সাহায্যে লগ-ইন করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার ফেসবুকের তথ্য ব্যবহারের জন্য কোনো অ্যাপ বা সেবা অনুমতি চাইলে, তা পড়ে দেখুন। মনে খানিকটা দ্বিধা থাকলেও সম্মতি দেবেন না। আর অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ফেসবুক হেল্প সেন্টারের সাহায্য নিতে পারেন।
অনুগ্রহ করে কোনো স্প্যাম লিংক পোস্ট করবেন না